বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয় অস্ট্রেলিয়ার

খেলাধুলা
স্পোর্টস ডেস্ক
০৬:৩৪:০৩পিএম, ১১ জুন, ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

ভারতকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেছে । অজিদের দেয়া ৪৪৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ ইনিংসে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান সংগ্রহ করে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে করা ৪৬৯ রানের জবাবে ভারত অলআউট হয় ২৯৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে অজিরা।

ম্যাচ জিততে বিশ্ব রেকর্ড করতে হতো ভারতের। চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলের ব্যাটিং রোমাঞ্চের আভাস তৈরি করলেও বাস্তবতা দেখাল ভিন্ন ছবি। শেষ দিনে অস্ট্রেলিয়ার ঝাঁজালো বোলিংয়ের সামনে আর দাঁড়াতে পারল না ভারত। স্কট বোল্যান্ড, ন্যাথান লায়ন, মিচেল স্টার্কদের ঝলকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া।

রোববার ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ২০৯ রানে হারিয়েছে প্যাট কামিন্সের দল। নিউজিল্যান্ডের পর টেস্টের শ্রেষ্ঠত্বের রাজদণ্ড পেয়ে গেল ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফলতম দল। প্রথম দল হিসেবে আইসিসির সবগুলো ট্রফি জেতার নজিরও গড়ল অজিরা। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪৪৪ রানের লক্ষ্যে ভারত থামে ২৩৪  রানে। মূলত প্রথম ইনিংসেই ম্যাচ খুইয়ে ফেলেছিলেন রোহিত শর্মারা।

অস্ট্রেলিয়ার ৪৬৯ রানের জবাবে ২৯৬ রানে গুটিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় ভারত। বড় লিডের সঙ্গে আরও ২৭০ রান যোগ করে বিশাল লক্ষ্য দেয় অজিরা। যা শুরুতে আভাস দিলেও পরে আর সামাল দিতে পারেনি ভারত। এক সেশনেই পড়ে যায় বাকি ৭ উইকেট। পঞ্চম দিনে ৭ উইকেট তারা হারে মাত্র ৫৫ রানে।

নিখুঁত লাইন লেন্থে চাপ বাড়ানো অজি বোলাররা পথ বের করতে খুব বেশি সময় নেয়নি। দিনের সপ্তম ওভারেই ম্যাচের যবনিকাপাত যেন টেনে দেন বোল্যান্ড। ফিফটির কিনারে থাকা কোহলিকে ড্রাইভে প্রলুব্ধ করে আনেন সাফল্য। আগের কয়েকটি বল একটু পেছনে করেছিলেন বোল্যান্ড। আউটের বলটি করলেন সামনে।  হালকা ফুলার লেন্থে বল পেয়ে ড্রাইভের নেশায় ডুবে স্লিপে ক্যাচ দেন ভারতের সেরা ব্যাটার। বা দিকে ঝাঁপিয়ে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় কোহলির ক্যাচ জমান স্টিভেন স্মিথ। দুই বল পরই অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে বোল্যান্ড কট বিহাইন্ড বানিয়ে ফেলেন রবীন্দ্র জাদেজাকে। এক ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে রোমাঞ্চের স্বপ্ন উবে যায় ভারতের।

এরপর শ্রিকার ভরতকে নিয়ে সামান্য প্রতিরোধ গড়েন রাহানে। প্রথম ইনিংসের মতো এবার আর টানতে পারেননি। ৩৩ রানের জুটির পর রাহানেকে এসে ফেরান মিচেল স্টার্ক। ১৮ মাস পর ফেরার টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৮৯ করা রাহানে এবার থামেন ৪৬ করে।

খানিক পর ন্যাথান লায়নের ভেল্কি। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা শার্দুল ঠাকুরকে কোন রান করতে দেননি তিনি। এরপর লেজ মুড়ে দিতে আর বেশি সময় নেয়নি তারা। ৪১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার লায়ন। ৪৬ রানে ৩ উইকেট নেওয়া বোল্যান্ড নায়ক ম্যাচ ঘোরানো স্পেল করে। গুরুত্বপূর্ণ ফেইজে উইকে নিয়েছেন স্টার্ক আর কামিন্সও।

তবে বোলারদের কেউ নন, ফাইনালের সেরা বাঁহাতি ব্যাটার ট্রেভিস হেড। প্রথম ইনিংসে ১৭৪ বলে ১৬৩ রান করে দলকে বড় পুঁজি পাইয়ে দেন তিনিই। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করে অবদান রাখেন স্মিথও।

অজিঙ্কা রাহানে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় দফায়ও লড়াই চালিয়েছেন। কিন্তু বিশাল টার্গেটের সামনে তা ছিল নিতান্তই অপ্রতুল। এরপর একে একে রাহানে, শার্দুল ঠাকুর, উমেশ যাদবরাও ফেরেন সাজঘরে। পঞ্চম দিনে সাফল্য পান নাথান লায়ন। তার ৪ উইকেট প্রাপ্তিতেই ত্বরান্বিত হয় অজিদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে সবক’টি ফরম্যাটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলো অস্ট্রেলিয়া। - জই