জমির দলিল রেজিস্ট্রেশন আইন পরিবর্তনের ডাক দিলেন- পলাশ

বাংলাদেশ
ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি
০৬:০৯:২০পিএম, ২১ জুন, ২০২৩
ছবি: জই

নওগাঁর ধামইরহাটে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করে ‘আমার দলিল আমি লিখতে চাই‘ গ্রাহকদের জিম্মি করে গলাকাটা দুর্নীতিবাজ দলিল লেখক সমিতির দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, জমির দলিলের রেজিস্ট্রেশন আইন পরিবর্তনের দাবিতে গণস্বাক্ষর আন্দোলনের মতো এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন আবু সাঈদ পলাশ নামে ধামইরহাটের এই যুবক।

বুধবার (২১ জুন) দুপুর একটায় উপজেলা সদর নিমতলী বাজার এলাকায় ফেস্টুন ও বুকে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে একাই দলিল রেজিস্ট্রেশন আইন পরিবর্তনের জন্য গণস্বাক্ষর আন্দোলনের ডাক দেন তিনি। এ সময় পথচারী, শিক্ষার্থী, ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সুধীমহল যুবকের আন্দোলনে সাড়া দিয়ে দলিল লেখক সমিতির আইন পরিবর্তন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজেরাই স্বাক্ষর দেন।

জানা গেছে, আবু সাঈদ পলাশ পেশায় একজন ব্যবসায়ি এবং উপজেলার চকময়রাম গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে পড়াশুনা শেষ করেছেন। পড়াশুনা শেষ করে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে চাকরি করতেন। পরবর্তীতে গ্রামের বাড়ি ফিরে একটি ব্যবসা শুরু করেন। কদিন আগে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে তিনি দলিল লেখক সমিতির দালালদের খপ্পরে পড়ে। এরপর এ আন্দোলনের ডাক দেন তিনি।

পলাশ বলেন, ‘সারাদেশের মানুষ দলিল লেখক সমিতির কাছে জিম্মি। তাদের নির্দিষ্ট ফি ছাড়া কোন সাধারণ মানুষ জমি রেজিস্ট্রি করতে পারে না। একজন সাধারণ মানুষ যদি আইনজীবী ছাড়া নিজের মামলা নিজে লড়তে পারেন তাহলে কেন একজন সাধারন মানুষ তার নিজের জমির দলিল নিজে লিখতে পারবেন না? দলিল লেখক আইনের পরিবর্তন হাওয়া জরুরী। তা না হলে এই জিম্মি দশা থেকে সাধারণ মানুষ কোনদিনই মুক্তি পাবে না। এ কারণেই তিনি এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।‘

পৌরসভার দক্ষিণ চকযদু সাত নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গল কোটা গ্রামের ছমির উদ্দিন মন্ডল বলেন, গত সোমবার উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ৩৮ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করতে গেলে দলিল লেখক সমিতির লোকজন তার কাছ থেকে ৮১ হাজার ২০০ টাকা দাবি করেন। এতোগুলো টাকা দিতে না পারাই তিনি দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারেননি। দলিল লেখক সমিতির দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও এর আইন পরিবর্তনের যৌক্তিক দাবিতে যুবকের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে সই করেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধামইরহাট দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল গফুর মন্ডল জানান, ‘ উপজেলা দলিল লেখক সমিতিতে ১৪৫ জন সদস্য আছে। তারা কেউই সরকারের কাছ থেকে কোন সুযোগ সুবিধা বা বেতন-ভাতা পায়না। ঈদের আগে কিছু অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয় এবং সে টাকাগুলো সকল সদস্যদের মাঝে বন্টন করা হয়। অবশিষ্ট টাকা দিয়ে আমাদের জীবন জীবিকা চলে।‘

উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে দলিল রেজিস্ট্রি আইন পরিবর্তনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে মানববন্ধন করে ওই যুবক। এবং চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। - জই