অশোভন আচরণের ইস্যুতে ইবির শিক্ষিকা ও কর্মকর্তার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ক্যাম্পাস
রবিউল আলম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
১০:০৫:১৭পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তার আব্দুস সালামের (সেলিম) বিরুদ্ধে পারিবারকে হয়রানি ও অসম্মানজনক আচরণের বিচারের দাবিতে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ঘটনায় পর এবার দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বহিরাগত কর্তৃক অশোভনীয় আচরন ও হুমকির পাল্টা অভিযোগ এনেছেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি  লিখিত পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন সেলিম।

অভিযোগপত্রে সেলিম দাবি করেন, ইদের ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম (সেলিম)। মেইন গেটের মূল ফটক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধকালীন সময় বন্ধ রাখার নির্দেশ ছিল। এছাড়া কোন মোটরসাইকেল ও ভ্যান চলাচল করবে না বলে প্রক্টর অফিস থেকে জানানো হয়। তবে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের আত্মীয়স্বজন পরিচয় সাপেক্ষে মূল গেটের দক্ষিণ পাশে ছোট ফটক দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।

অভিযোগপত্রে সেলিম বলেন, গত ১৪ এপ্রিল আনুমানিক বেলা ১২টা ২০মিনিটের দিকে ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে প্রধান ফটকের দিকে একটি বাইক দ্রুত আসতে থাকে, তখন কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা সেই মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এসময় কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের সাথে বাইকচালক উচ্চস্বরে কথা কাটাকাটি ও মূল ফটক খোলার জন্য কর্তব্যরত আনসারদের গালিগালাজ, অসৌজন্যমূলক আচরণ ও দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে বাংলা বিভাগের সাবেক ছাত্র চঞ্চল ভাইকে দেখতে পেয়ে বলি, ‘দাদা আপনি আমার ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই, আপনি একটু কষ্ট করে ঈদের কয়েকদিন মূল ফটকের দক্ষিণ পাশের ছোট গেটে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী চলাচল করুন।’ তখন তিনি বলেন, ‘আমি কি লেবার যে ছোট গেট দিয়ে যাবো?’ এছাড়া আমাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এতে আমি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে বহিরাগতদ্বারা লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে মনে করি।

কর্মকর্তা সেলিমের সাথে যোগাযোগ করলে বলেন, ইদের ছুটিতে ভীড় থাকায় গত পহেলা বৈশাখের দিনের ঘটনা। ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে প্রক্টর অফিয়ে একটা নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করা হয়। সেখানকার রেজুলেশন অনুযায়ী মোটর বাইক ও ভ্যান গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। যারা এখানকার আবাসিক শিক্ষক পরিবারে থাকে তাদেরকে পরিচয় সাপেক্ষে পকেট গেইট দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ম্যামের স্বামী জোরপূর্বক মেইন গেইট দিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করলে পরে আমি উপস্থিত হই। এবং নিয়মটা বুঝিয় দিই। আশেপাশের লোকজন ছিল তাদের থেকে সত্যটা জেনে নিতে পারেন। বিষয়টা এমন যে ওনাকে মেইন গেইট দিয়েই যেতে হবে।

এবিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে আমি এই বিষয়ে বিব্রত এবং লজ্জিত। সে (কর্মকর্তা) যে অভিযোগ এনেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অভিযোগ অনুযায়ী ঘটনা ঘটলে ওনি(কর্মকর্তা) আগে কেন অভিযোগ আনেননি? সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সম্মানার্থে আমি এতদিন ধৈর্য ধরে ছিলাম। ভেবেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এর একটা বিচার করবে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় তারা বিষয়টি নিয়ে কোন সম্মানজন সমাধানের ব্যবস্থা করে নাই। এটা শিক্ষক সমাজের জন্য অপমান ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত)  এইচ এম আলী হাসান বলেন, দুটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিষয়টি সেনসিটিভ। অভিযোগটি শীঘ্রই উপাচার্যের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং তিনিই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিবেন।